বাহুবলে বিশ্ব শাসন করতে চায় আমরিকা। অন্যদিকে, কূটনৈতিক শক্তির বলে আমেরিকা থেকে ইউরোপকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ইরান। শুধু তাই নয়, বৃহত্তর পরিসরে বিশ্বকে দুই ভাগে বিভক্ত করতে সক্ষম হয়েছে ইরান।
এর এক ভাগে আছে আমেরিকা, অন্যভাগে রয়েছে রাশিয়া, চীন, গোটা ইউরোপ এবং ইরান। মুসলিম বিশ্বেও ইরানের দুর্বল অবস্থান কেটে গেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে ঝানু কুটনীতির ওপর ভর করার কারণে; অস্ত্র ও আগ্রাসন দিয়ে নয়। একথাও বলে রাখি, আমেরিকা বরাবরই কূটনীতিতে যতটা না দক্ষ তার চেয়ে অনেক বেশি ভরসা করেছে সমর শক্তির ওপর। যখনই সমর শক্তি ও কূটনীতিতে কুলিয়ে উঠতে পারে নি তখন দিয়েছে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। সে নিষেধাজ্ঞাও কতটা কার্যকর তা নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে।
ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার কূটনৈতিক দুর্বলতা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছিল। এককথায় তাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতা ছিল নজিরবিহীন।

শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার সামরিক দুর্বলতাও একেবারে নগ্নভাবে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, ইরানের কুদস ফোর্সের সাবেক প্রধান জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার পর ইরান মার্কিন দুটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেও জবাবে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে নি আমেরিকা। এখানেই শেষ নয়, সৌদি আরবকে যে নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছে আমেরিকা সে দায়িত্বও তারা পালন করতে পারে নি। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আরামকো তেল স্থাপনা একদম ঝাঝরা করে দিয়েছে ইয়েমেনের হুথিরা অথচ মার্কিন প্রেট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা আমেরিকার বহু মূল্যের রাডার সেগুলো ধরতে ও প্রতিহত করতে পারে নি। পারস্য উপসাগরে ইরানের আকাশে সর্বাধুনিক স্টিলথ ড্রোন পাঠানোর পরই তা ইরান ধ্বংস করে দিয়েছিল। সে ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প হম্বিতম্বি করলেও মার্কিন জেনারেলরা তাকে থামিয়ে দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, “ইরানের ওপর হামলা করলে সেনাদের লাশ নিতে হবে জাহাজ ভরে!”
সর্বশেষ আরো একটু বলি- মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভেনিজুয়েলায় তেলের জাহাজ বহর পাঠিয়েছে ইরান। আমেরিকা শুধু বড় বড় কথা বলেছে কিন্তু ইরানি জাহাজের টিকিটাও ছুঁতে পারে নি। ব্রিটিশরা জিব্রাল্টার প্রণালীতে ইরানি জাহাজ আটক করার পর ইরান পারস্য উপসাগরে ব্রিটিশ জাহাজ আটক করেছিল। আমেরিকা মনে হয় সে দৃশ্য মনে রেখেছিল বেশ ভালোভাবেই। জো বাইডেন ক্ষমতা নেয়ার পর তাকে ট্রাম্পের ব্যর্থতার ওপর দাঁড়িয়ে সামনে অগ্রসর হওয়ার দম নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আশা করব তিনি বাহুশক্তি নয় বরং কুটনৈতিক শক্তির ওপর ভর করবেন।
ভারটেক্স নিউজ/এমএসআই/১০
মন্তব্য করুন